পর্যটন শহর শতভাগ নিরাপদ ও আইন শৃঙ্খলার নজরধারীতে ‘সিসিটিভি’ ক্যামেরার বেষ্টনীতে বন্দি হতে যাচ্ছে কক্সবাজার। কক্সবাজার জেলা পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও কক্সবাজার পৌরসভা অধিনে পৃথকভাবে বসানো হচ্ছে এসব সিসিটিভি ক্যামেরা। ৪ টি সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের অধিনে আড়াই শতাধিক ক্যামেরা বসানোর কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। যার মধ্যে ৭৮ টি ক্যামেরা বসানো ইতিমধ্যে শেষ। এসব ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসে সার্বক্ষণিক পর্যাবেক্ষণ করছে কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ট্যুরিস্ট পুলিশ।
অপরদিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের পাঁচটি প্রবেশ পথে জেলা প্রশাসনের অধীনে পাঁচটি আইপি ক্যামরা রয়েছে। যা জেলা প্রশাসনের নিজস্ব বিচ কর্মীরা নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, কক্সবাজার জেলা পুলিশের অধিনে ৫৪ টি পয়েন্টে দীর্ঘদিন ধরে ৫৪ টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো আছে। যার মধ্যে প্রাকৃতিক এবং যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে বন্ধ আছে ১৯ টি। অপর ৩৫ টি ক্যামেরা সচল রয়েছে। এসব ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আলাদ কক্ষ রয়েছে। যেখানে ৩ জন কর্মকর্তা সার্বক্ষণিকভাবে পর্যাবেক্ষণ করে আসছে।
এর বাইরে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও কক্সবাজার পৌরসভার অধিনে কিছু ক্যামেরা বসানো শেষ আরও কিছু ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম।
তিনি জানান, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ তাদের অধিনস্থ ১০৬ টি পয়েন্টে ১০৬ টি ক্যামেরা বসানোর কাজ শুরু করেছে। প্রতিষ্ঠানের পক্ষে এক মাসের মধ্যে সব ক্যামেরা বসানো হবে বলে জানানো হয়েছে। কক্সবাজার পৌরসভার পক্ষে বসানোর হচ্ছে ৭৫ টি ক্যামেরা। যার মধ্যে ২৫ টি বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এর ছাড়াও পর্যটন স্পটে ক্যামেরা বসিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
তিনি আরও জানান, সকল ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণ অধিকার জেলা পুলিশকে দেয়া হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ কক্ষে বসে তা পর্যাবেক্ষণ করে পুলিশ অপরাধ সহ সকল কিছুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সহজতর হবে।
কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) চেয়ারম্যান কমোডর মোহাম্মদ নুরুল আবছার জানিয়েছেন, যে সব সড়ক কউকের অধিনের রয়েছে সেখানেই সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। দ্রæত সময়ের মধ্যে এসব ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হবে। ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণ অধিকার পুলিশকে দেয়া হবে।
কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মো. মাহাবুবুর রহমান চৌধুরী জানিয়েছেন, পৌরসভার ২৫ টি পয়েন্টে ইতিমধ্যে ২৫ টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। যার নিয়ন্ত্রণ পুলিশকে দেয়া আছে। আগামি এক মাসের মধ্যে আরও ৫০ টি ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ হবে।
এদিকে, কক্সবাজারের পর্যটন স্পটে ১৮ টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার জোন। পর্যাক্রমে সকল স্পটেও সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর হবে বলে জানিয়েছেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের হেডকোয়ার্টারের ডিআইজি মো. আবু কালাম সিদ্দিক।
তিনি বলেছেন, বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার হবে দেশী-বিদেশী পর্যটকের জন্য শতভাগ নিরাপদ একটি অঞ্চল। যার জন্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়ে সার্বক্ষণিক নজরধারী শুরু করা হয়েছে। পর্যায়ক্রমে সকল স্পট ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানেও বসানো হবে এই ক্যামেরা।
মঙ্গলবার ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের সম্মেলন কক্ষ কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহফুজুল ইসলাম আশা করছেন ক্যামেরা বসানোর পুরো প্রক্রিয়া শেষ হলে সকল প্রকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ, অপরাধিদের শনাক্ত ও আটক সহজ হয়ে উঠবে। কক্সবাজার হবে শতভাগ নিরাপদ একটি পর্যটন শহর।